চীনের কবল থেকে হংকংকে ‘স্বাধীন করতে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। রবিবার
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত গেয়ে এবং দেশটির পতাকা উড়িয়ে এমন আহ্বান জানায়
হংকং-এর বিক্ষুব্ধ অন্দোলনকারীরা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
টানা
১৪ সপ্তাহে গড়িয়েছে হংকং-এর চীনবিরোধী বিক্ষোভ। ইতোমধ্যেই এ গণবিক্ষোভ
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি চীন সফরে হংকং
সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বেইজিং-এর প্রতি তাগিদ দিয়েছেন জার্মান
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিজেদের বার্তা
পৌঁছে দিতে চাইছে হংকং-এর বিক্ষোভকারীরা। এজন্যই তারা মার্কিন পতাকা উড়িয়ে ও
দেশটির জাতীয় সংগীত গেয়ে হংকংকে ‘স্বাধীন’ করার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের
সমর্থন কামনা করেন। সাহায্য চান মার্কিন প্রেসিডেন্টের। রয়টার্স জানিয়েছে,
রবিবার মার্কিন কনস্যুলেটে হাজির হয়ে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার
পরিকল্পনা করছে বিক্ষোভকারীরা।
শনিবার রাতভর সহিংসতার পর রবিবার গণতন্ত্রের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও মার্কিন পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন হংকং-এর বিপুল সংখ্যক মানুষ। তারা ‘স্বাধীনতার জন্য লড়াই কর, হংকংয়ের পক্ষে দাঁড়াও’ ‘বেইজিংকে প্রতিরোধ কর, হংকংকে মুক্ত কর’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দেয়।
চেরি নামে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, হংকংয়ে চীনপন্থীরা কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং পুলিশ নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে, তা তাদেরকে (যুক্তরাষ্ট্র) দেখানোর জন্য আমাদের এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ। আমরা চাই মার্কিন প্রশাসন হংকংয়ে মানবাধিকার রক্ষায় সহায়তা করুক।’ মার্কিন কনস্যুলেট অভিমুখে যাত্রার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের হংকং বিষয়ক পর্যটন উপদেষ্টাকে সতর্ক করে বলেছে, সেখানে সাম্প্রতিক প্রপাগান্ডার কারণে মার্কিন নাগরিক ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। কারণ চীন অভিযোগ করছে, বিশৃঙ্খলায় প্ররোচনা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে হংকং-এর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বেইজিং-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হংকং-এ সহিংসতা হলে বেইজিং-এর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে আরও কঠোর হবে ওয়াশিংটন।
এক সময়কার ব্রিটিশ কলোনি হংকং এখন চীনের অংশ। ‘এক দেশ, দুই নীতি’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে এক পর্যায়ে ওই বিলকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতা, বৃহত্তর গণতন্ত্র ও চীনের নিযুক্ত নির্বাহী প্রধানের পদত্যাগের দাবি।