দেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। এই বাস্তবতায় সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)। বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে অপ্রয়োজনীয় লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খোলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবে হবে বলে মত দিয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি।
চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পর্যালোচনায় এমসিসিআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকলেও চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ভালো অবস্থায় আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৬৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মূলত এ সময়ে আমদানি ব্যয় অনেকটা বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘাটতি বেড়েছে। এ সময়ে কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় ছিল। ফলে আমদানি ও রফতানি উভয়ই বেড়েছে। দেশে ও দেশের বাইরে সবখানেই অর্থনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ, কিন্তু আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে। এতে দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সুসংবাদ হলো, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে নিট প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, এ সময়ে দেশে এফডিআই এসেছে ১৬৭ কোটি ডলার। সামগ্রিক হিসাবেও এ সময় দেশে এফডিআই বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।
বাংলাদেশের শ্রমিকদের নিম্ন মজুরি সাধারণত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয়। তার পরও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ দেশে বিনিয়োগ করতে ইতস্তত করেন; কারণ, হিসেবে তাঁরা অনুন্নত অবকাঠামো ও জ্বালানি ঘাটতির মতো অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা, নীতি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোতে ধারাবাহিকতার অভাব, শিল্প জমির স্বল্পতা, দুর্নীতি ও নিয়মের অস্বচ্ছ ও অসম প্রয়োগ ও প্রবিধানকে উল্লেখ করে থাকেন।