ঢাকা: কানাডা ও বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রত্যাশাও করছেন তিনি।
কানাডার টরন্টোতে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের (ওসিসি) যৌথ আয়োজনে প্রথমবারের মত ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্যমন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘কানাডা-বাংলাদেশ বাণিজ্য ফোরাম উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে উভয়দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন। ব্যবসায়ীদের এ ফোরাম উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। তারা একে অপরের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন এবং সুবিধাজনকখাতে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কানাডার বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। কানাডার ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে এগিয়ে এলে এ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার মোট বাণিজ্য প্রায় ১৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরমধ্যে বাংলাদেশ রফতানি করে ১৩৩৯.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের পণ্য এবং আমদানি করে ৫৮৯.২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের পণ্য। কানাডা বাংলাদেশকে ২০০৩ সালে থেকে পোলট্রি, ডেইরি, ডিম, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যাতীত সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও কানাডা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে বাংলাদেশ আশা করে। উভয়দেশের ব্যবসায়ীরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে কানাডায় বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ বিজ্ঞাপন
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির উপস্থিতিতে এ সময় এফবিসিসিআই এবং ওসিসি-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং ওসিসি সভাপতি রকো রসি নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
অনুষ্ঠানে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিজানুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ খোরশের ওয়াহাব, অন্টারিও চেম্বারের সহ-সভাপতি লুই ডিপামাসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ফোরামের বৈঠকে অংশ নেন।
ফোরামে কানাডার বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা, কানাডার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা, কানাডাস্থ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।