রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকের দেওয়া ঋণের উপর আরোপিত ও অনারোপিত সুদ আয় খাতে নেওয়া হলে তা আর মওকুফ করা যাবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফাইল ছবি
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো পরিচালক বা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণ কিংবা সুদ কোনো অবস্থাতেই যাতে মওকুফ করা যাবে না, তাও পরিপালন করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগম স্বাক্ষরিত সার্কুলারটি মঙ্গলবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়।
সুদ মওকুফ সংক্রান্ত এর আগের নির্দেশনাটি অবলোপনকৃত (রাইট অফ) ঋণের বেলায়ও প্রযোজ্য হবে জানিয়ে তার সঙ্গে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, “তফসিলি ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষেত্রেও উক্ত নীতিমালা অনুসরণীয় হবে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের আয় খাত বিকলন করে সুদ মওকুফ করা যাবে না।”
ইতোপূর্বে জারি করা সার্কুলারে ‘ব্যাংকের আয় খাত বিকলন করে সুদ মওকুফ করা যাবে না’ উল্লেখ করা হয়।
তার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবারের নির্দেশনা এল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনো সুদ নগদে আদায় না হলে তা আয় খাতে নেওয়া যায় না।
কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে নগদে সুদ আদায় না হলেও তা আয় খাতে নেওয়ার বেশ কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে।
এরমধ্যে অবলোপনকৃত ঋণের সুদও আয় খাতে নেওয়া হয়েছে। এখন আয় খাতে নেওয়া অবলোপনকৃত ঋণের সুদ মওকুফ করার উপর নিষেধাজ্ঞা দিল।
সার্কুলার বলছে, “সুদ মওকুফে অপরিহার্য ক্ষেত্রে তহবিল ব্যয় আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য এর যৌক্তিকতা নিশ্চিতকরণে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের মাধ্যমে নিরীক্ষা করত হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স (এইচআইসিসি) এর মতামত গ্রহণ করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানী আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো ব্যাংক-কোম্পানির নিকট হইতে উহার পরিচালক, তাহার পরিবারের সদস্যবর্গ, ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক, জামিনদার, পরিচালক-অংশীদার, ম্যানেজিং এজেন্ট হিসাবে স্বার্থ রয়েছে, কোনো ব্যক্তির সঙ্গে ব্যাংকের পরিচালক জামিনদার বা অংশীদার হিসেবে স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠতা রয়েছে-তাদের ঋণ সুদ মওকুফ করা যাবে না।”
আইনের এই ধারা লঙ্ঘনের সুদ মওকুফ করলে অন্যূন ৩ বৎসরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর নানা কৌশলও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ধরা পড়ে।
তাতে দেখা যায়, কোনো পরিচালকের নিজ ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের পরিচালকের নেওয়া ঋণ সুদ মওকুফ করে দিচ্ছেন। এর বিনিময়ে দ্বিতীয় ব্যাংকে থাকা নিজের ঋণ সুদ মওকুফ করিয়ে নিচ্ছেন।
সুদ মওকুফ সংক্রান্ত কোনো সুর্নিদিষ্ট নীতিমালা না থাকায় গত এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংক তা সুনির্দিষ্ট করে।