ফোনের এক পাশে রণবীর কাপুর, অন্য পাশে নীতু সিং। বললেন, ‘তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।’ ছেলেকে কত কথাই তো বলেন নীতু। এভাবে তো কখনো বলেন না। কী হয়েছে? এরপর নীতু সিংয়ের কণ্ঠে শব্দ বাক্য হয়ে ঝরে পড়ে সেই কঠিন সত্য।
বোনম্যারো ক্যানসারে আক্রান্ত বাবা ঋষি কাপুর। হঠাৎ রণবীরের পৃথিবী যেন শূন্য হয়ে যায়। এক মুহূর্তের জন্য সেখানে কিছুই ছিল না। না কোনো দুঃখবোধ, না অন্য কিছু। চোখে পানি নিয়ে অনেকক্ষণ কেবল বলেছেন, ‘না, বাবার কিছু হয়নি। বাবার ক্যানসার হয়নি।’ এভাবে ঘণ্টাখানেক কাঁদতে কাঁদতে অস্বীকার করেছেন চরম সেই সত্যি। পরে একসময় চোখ মুছে শক্ত হয়ে মাকে বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ করব। আমরা লড়ব ক্যানসারের বিরুদ্ধে।’
ডিএনএ ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নীতু সিং জানিয়েছেন সেই মুহূর্তের কথা। যখন রণবীর কাপুর প্রথম বাবার ক্যানসারের কথা শুনলেন, এভাবেই আচরণ করেছিলেন। এরপর শুটিং বন্ধ করে ছুটে যান বাবার কাছে। এক মুহূর্ত দেরি না করে বাবাকে নিয়ে উড়াল দেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।
ঋষি কাপুর যখন নিজের ক্যানসারের কথা জানতে পারলেন, তাঁর প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? ঋষি কাপুর নিজেই দিয়েছেন সেই উত্তর। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋষি কাপুর বলেছেন, ‘প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময় পেলাম কোথায়। দিল্লিতে শুটিং চলছিল। একটা নতুন ছবির পাঁচ দিনের শুটিং শেষ। ষষ্ঠ দিনের শুটিংয়ে দেখি আমার ছেলে রণবীর কাপুর, ওর মা আর আরও কিছু আত্মীয়স্বজন নিয়ে সেটে উপস্থিত। তাঁরা আগে প্রডিউসারকে জানাল। এরপর আমাকে নিয়ে মুম্বাই চলে গেল। সেখান থেকে নিউইয়র্ক। আমার ছেলে আক্ষরিক অর্থেই আমাকে ঠেলে প্লেনে উঠিয়েছে। তবে নিজের ক্যানসারকে মেনে নিতে আমার সময় লেগেছে।’
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঋষি কাপুর শেয়ার করেছেন তাঁর ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা। বলেছেন, ‘গত কয়েক মাস সময়টা অনেক দীর্ঘ। আর এই সময় আমাকে ধৈর্যশীল বানিয়েছে। আগে আমার এত সহনশীলতা ছিল না। সারা জীবন স্ত্রী আর বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছি, আমার কোনো ধৈর্য নেই। আর এ বেলা সৃষ্টিকর্তা আমাকে শেখাল, ধৈর্যই সব গুণের ভেতর সবচেয়ে বড়।’