গত ১০ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ কার্যালয়ে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানের রাষ্ট্রদূত এই আশ্বাস দেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূতের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘জাপানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। জাপানের বহুজাতিক গাড়ি নির্মাতা মাজদা মোটর করপোরেশন বাংলাদেশে একটি অটোমোবাইল প্ল্যান্ট স্থাপনে আগ্রহী।’

জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশে একটি এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনেও আগ্রহী।’

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন, ‘এ ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতি সব সময় আমাদের সহানুভূতি রয়েছে।’ মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া না দেওয়াসহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি।

রোহিঙ্গা সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তা খুবই প্রশংসনীয়।’
বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহায়তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে জাপান দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি মেট্রোরেল, মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে জাপানের সহায়তার বিশেষ প্রশংসা করেন।

এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে।’

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে তাদের রাজি করানোর জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট বোঝা। মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের এখান থেকে ফেরত নিতে হবে।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান দেশটির রাষ্ট্রদূত। জবাবে শেখ হাসিনাও রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।

দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে জাপানের জন্য একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। সূত্র: বাসস

Leave a Response