>> থাকছে দুই থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায়ের বিধান
>> পণ্য আমদানি-রফতানির চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ৬ বছরের কারাদণ্ড
>> শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পেলে নোটিশ ছাড়াই পণ্য বাজেয়াপ্ত-জরিমানা

চোরাচালানে জড়িত সন্দেহে যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা পরোয়ানা ছাড়াই গৃহ তল্লাশির ক্ষমতা দিয়ে ‘কাস্টমস আইন ২০১৯’ বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। বিলে চোরাচালান নিরোধে কাস্টমস কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা, গৃহ তল্লাশি ও আটকের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া পণ্য আমদানি ও রফতানিতে কাস্টমস ডিউটি বা শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা বা চোরাচালানের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রফতানির চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ছয় বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ওই পণ্য বাজেয়াপ্ত করাসহ দুই থেকে তিনগুণ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘কাস্টমস আইন, ১৯৬৯’ রহিত করে ‘কাস্টমস আইন ২০১৯’ বিলটি উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

গত বছর দশম সংসদের ২৩তম অধিবেশনে একই শিরোনামে (কাস্টমস বিল-২০১৮) সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন। বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে সরকার বিলটিতে আরও কিছু পরিবর্তন এনে নতুনভাবে ‘কাস্টমস বিল ২০১৯’ শিরোনামে পুনরায় মন্ত্রিসভার অনুমোদন নেয়া হয়।

বিলে শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পেলে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা ছাড়াই পণ্য বাজেয়াপ্ত বা জরিমানা আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। ওয়্যারহাউস সুবিধার অপব্যবহার করলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং শুল্ক পরিশোধ ছাড়া পণ্য খালাসে সহায়তা করলে একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

বিলে দুই লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বিলে কাস্টম হাউস বা ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার সর্বোচ্চ পরিমাণ জরিমানা আরোপ করতে পারবেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতি বলা হয়েছে, ‘কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯’-এর পরিবর্তে বাংলায় একটি আধুনিক কাস্টমস আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিনের। এ ছাড়া বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত মান-সংক্রান্ত কনভেনশন অনুযায়ী, আমদানি ও রফতানি পণ্যেও সাপ্লাই চেইনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার নেতৃত্বে কাস্টমস ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিধিবিধান সন্নিবেশ করে নতুন আইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ট্রেড ফেসিলিয়েশন এগ্রিমেন্টের কতিপয় ধারাও আইনে অন্তর্ভুক্ত করার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যমান কাস্টমস অ্যাক্টকে আরও সহজ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক, যুগোপযোগী করাসহ বাংলা ভাষায় প্রণয়নের মাধ্যমে আমদানি ও রফতানিকারকসহ সব অংশীজনদের সহজসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে ‘কাস্টমস আইন ২০১৯’ সংসদে উত্থাপন করা হলো।

আরও দুটি বিল উত্থাপিত

ওই বিল ছাড়াও আজ সংসদে ‘বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র আইন, ২০১৯’ বিল উত্থান করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং ‘বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন, ২০১৯’ বিল নামে পৃথক আরেকটি বিল উত্থাপন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

Leave a Response