রাজধানী থেকে অপরাধ দূর করতে সব ধরনের ‘গ্যাং’ নিশ্চিহ্ন করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি বলেছেন, “কিশোর গ্যাং বলি আর বড় গ্যাং বলি, ঢাকায় গ্যাং বলে কোনো শব্দ থাকবে না। সবাইকে নিশ্চিহ্ন করা হবে “
আশুরা সামনে রেখে শনিবার হোসেনী দালানের ইমামবাড়ার নিরাপত্তার আয়োজন দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ বিষয়ে কথা বলেন আছাদুজ্জামান মিয়া।
রাজধানীতে কিশোর-তরুণদের মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে, যাকে বলা হচ্ছে ‘গ্যাং কালচার’। অনেক ক্ষেত্রে এসব দল গড়ে উঠছে বিভিন্ন নামে খোলা ফেইসবুক গ্রুপকে কেন্দ্র করে।
স্মার্টফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছে, সংগঠিত হচ্ছে। এরা মাদকের নেশা, ছিনতাই, রাহাজানির মত অপরাধে যেমন জড়াচ্ছে, বিভিন্ন দলের কোন্দলে হত্যাকাণ্ডের মত ঘটনাও ঘটছে।
তাজিয়া মিছিল ঘিরে প্রতিবছেই এ ধরনের কিশোরদের বিভিন্ন দল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে বলে পুলিশ কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক।
উত্তরে তিনি বলেন, “গ্যাং কালচারের বিরুদ্ধে ডিএমপি শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অবলম্বন করেছে। ঢাকায় কোনো গ্যাং থাকবে না। অন্য কাউকেও মিছিলে নাশকতা করতে দেওয়া হবে না।”
বরগুনায় ‘বন্ড জিরো জিরো সেভেন’ নামের এক ফেইসবুক গ্রুপ ঘিরে সংঘবদ্ধ হওয়া একদল কিশোর-তরুণের হাতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকাতেও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় উঠতি বয়সী অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সক্রিয় হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকার উত্তরায় অভিযান চালিয়ে গত জুলাই মাসে ১৪ কিশোর-তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ জানিয়েছিল, তারা ‘এফএইচবি গ্যাংস্টার’ নামের এক ফেইসবুক গ্রুপের সদস্য।
এরপর ২৫ অগাস্ট রায়েরবাজার এলাকা থেকে ‘স্টার বন্ড’ ও ‘মোল্লা রাব্বি’ নামে দুই গ্রুপের১৭ কিশোরকে ধারালো অস্ত্র, মদকসহ আটক করে সংশোধনাগারে পাঠায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মুগদা-মাণ্ডা এলাকা থেকে ২৩ তরুণকে আটক করে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়, অপ্রাপ্তবয়স্ক তিনজনকে পাঠানো হয় সংশোধনাগারে। তারা কিশোর-তরুণদের গ্যাং ‘ডেভিলস কিং’, ‘চান-যাদু’ ও ‘আগুন’ এর সদস্য এবং মাদক সেবন, ছিনতাই, মারামারি, চুরির মত অপরাধে জড়িত বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১০ জন কিশোরকে আটক করে পুলিশ। পুরনো মামলা থাকায় তাদের সাতজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাকিদের সতর্ক করে দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, গত কয়েক বছরের মত এবারও আশুরার তাজিয়া মিছিলে সব প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোরা, চাকু, তলোয়ার, বর্শা, বল্লম এবং আতশবাজি বহন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে।
ঢাক-ঢোল, বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট বা উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করে- এরকম কিছুই মিছিলে ব্যবহার করা যাবে না বলে পুলিশ কমিশনার জানান।