ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এই আদেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ২০ মিনিটে এই আদেশ দেওয়া হয়।

আদেশে আদালত বলেছেন, খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বলেছেন, তিনি বারবার আদালতে আসতে পারবেন না। এরপর ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর এবং আজও খালেদা জিয়া কারাগার কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, তিনি আদালতে আসতে পারবেন না। অর্থাৎ আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক। অথচ মামলার দুই আসামি প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হননি। এমন অবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁকে জামিনে রেখে বিচার চলবে।

এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে কি না, সেই বিষয়ে আজ আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করেন আদালত।

আজ শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, গতকাল খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। খালেদা জিয়া তাঁদের বলেছেন, তিনি আদালতে আসতে চান। কারাগার কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে যে কথা বলেছেন তা ঠিক নয়। বাস্তবে সুস্থ হলে তিনি আদালতে হাজির হবেন। খালেদার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে দরখাস্ত দিয়েছেন তা তিনি পারেন না। এ ব্যাপারে আদালত আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে আদেশ দেন।

আইন ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে আদালত বলেন, এক বা একাধিক আসামি যদি অনুপস্থিত থাকে, সে ক্ষেত্রে যদি কোনো পক্ষ আবেদন নাও করে তাহলেও আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিতে পারেন। খালেদা জিয়া না আসায় বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। এ মামলা ১ বছর ৯ মাস ধরে যুক্তিতর্ক শুনানি চলছে। খালেদা জিয়া না আসায় যুক্তিতর্ক শুনানি হচ্ছে না।

নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারেই বন্দী আছেন খালেদা জিয়া।

এর আগে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছেন, খালেদা জিয়া আদালতে আজও (গতকাল) আসতে চাননি। আদালতকে তিনি সহযোগিতা করছেন না। অপর দুই আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য আছে। অথচ তাঁদের পক্ষে যুক্তিতর্ক করা হচ্ছে না।

আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসেন। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, এ আদালতে ন্যায়বিচার নেই। তিনি অসুস্থ। তিনি আর আদালতে আসবেন না। যত দিন ইচ্ছা আদালত তাঁকে সাজা দিতে পারেন।

এর আগে এ মামলার বিচার চলছিল পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে। এ মামলায় দুদক তাঁর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে। খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির যুক্তিতর্ক শুনানি বাকি রয়েছে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান।

Leave a Response