জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার এখন অনুষ্ঠিত হবে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে। মামলার আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অপর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এই কারাগারে বন্দী আছেন। তিনি এ মামলায় নির্ধারিত তারিখে হাজিরা না দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, এটি হলে তা হবে আইনের পরিপন্থী।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। বয়স ও সামাজিক মর্যাদার কথা বিবেচনা করে আদালত তাঁকে এই দণ্ডাদেশ দেন। এরপর থেকে খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি পুরান ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল আজ এই কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলাটা গত ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় মাস হয়ে গেল কোনো কার্যক্রম করতে পারছি না। জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়া উপস্থিত হচ্ছেন না। এ কারণে আমরা বলেছি, খালেদা জিয়া যেখানে আছেন সেখানেই আদালত বসানো প্রয়োজন। আমরা বলার পর আজ গেজেট প্রকাশ করার সম্ভাবনা আছে। গেজেট সাপেক্ষে আগামীকাল কারাগারে আদালতের কার্যক্রম বসবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ কি না, তা আমি জানি না। যে রেকর্ড আছে সেখানে তিনি গুরুতর অসুস্থ, তা উল্লেখ নেই। আমরা জানি তিনি আসার জন্য অনুপযুক্ত ছিলেন। যেদিন মামলার শুনানির তারিখ ছিল সেদিন ডাক্তার লিখেছিলেন, তিনি ওই দিন চলাচলে অনুপযুক্ত।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে কাজল বলেন, ‘এটা প্রকাশ্য আদালত। জনগণ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে, তাঁর আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এ মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানমতে এ আদালত হচ্ছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বারবারই বলেছি, তাঁকে (খালেদা জিয়া) আদালতে আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। কিন্তু তিনি আদালতে উপস্থিত হননি। আমরা আদালতকে বলেছিলাম, সাক্ষ্য আইন সংশোধন করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচার করার জন্য। আমরা আদালত এও বলেছিলাম, এটা একটা পরিত্যক্ত জেলখানা। এখানে অনেক জায়গা আছে। জনগণের উপস্থিতিতে এখানে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।’

মোশাররফ হোসেন জানান, কারাগারের ভেতরে আদালতের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তিনি নিজে তা দেখে এসেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারাগারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, এ কারাগারের ভেতর আদালতের অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। আগে সেটি অফিস ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

Leave a Response