বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আর সেতুর পশ্চিম প্রান্তের (সিরাজগঞ্জের দিকে) যানজট এসে ঠেকেছে সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়ক পর্যন্ত। এর ফলে ঘরমুখী মানুষকে রাস্তায় আটকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর যানজট টোল প্লাজা পর্যন্ত আসার সময় টোল গ্রহণ মাঝেমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার রাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেতুর টোল প্লাজা এলাকা থেকে যানজট শুরু হয়। টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরিদর্শক এশরাজ হোসেন জানান, সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় থেকে সৃষ্টি হওয়া যানজট আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত এসে পৌঁছে। সেতু কর্তৃপক্ষ যানজট টোল প্লাজা পর্যন্ত আসার পর টোল নেওয়া বন্ধ রাখছে। আবার ওই এলাকা যানজটমুক্ত হলে টোল নেওয়া শুরু করছে। এ কারণে সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের কারণে শত শত যানবাহনের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
রংপুরগামী আবুল হোসেন নামক এক বাসযাত্রী জানান, ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত আসতে তাঁর সময় লেগেছে সব মিলিয়ে ১০ ঘণ্টা। এর মধ্যে ঢাকার মহাখালী থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে সাড়ে ছয় ঘণ্টা। বাকি চার ঘণ্টায় তিনি বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত এসে যানজটে আটকা পড়ে আছেন।
বগুড়াগামী পিকআপ ভ্যানের যাত্রী আবুল খায়ের জানান, চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে তেমন যানজটে পড়তে হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগ সড়ক থেকেই শুরু হয়েছে যানজট।
বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩২ হাজার ৪৩২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে, যা সেতু চালু হওয়ার পর সর্বোচ্চ পারাপারের রেকর্ড।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দীর্ঘ এই ২২ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগছে।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকালের তুলনায় আজ ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল ৯টা থেকে ২২ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কখনো বন্ধ আবার কখনো ধীরগতিতে গাড়ি চলছে। বিশেষ করে ধোপাকান্দি সেতু, নলকা সেতু এলাকায় এই যানজট বেশি হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে দুই সারি হওয়ায় যানবাহন কোনো দিকেই চলতে পারছে না। এর প্রভাব পুরো সড়কেই পড়ছে। কর্তব্যরত পুলিশের সদস্যরা এক লাইন বন্ধ রেখে পর্যায়ক্রমে যানবাহন চালানোর অনুমতি দিচ্ছেন।
হাটিকুমরুল গোলচত্বরে বসে দায়িত্ব পালন করছেন হাইওয়ে পুলিশ বিভাগের পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, হঠাৎ করে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। চালকেরা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছেন। এদের নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে চলতি পথে গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে। এর ফলে পেছনের গাড়িগুলোর চলাচল বন্ধ থাকছে। এটি স্বাভাবিক করতে আরও ১০ থেকে ২০ মিনিট সময় ক্ষেপণ হচ্ছে।