সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আফগানিস্তান পরিস্থিতির জন্য জো বাইডেনকে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
তালেবানের হাতে কাবুল পতনের পর বাইডেনকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবার তিনি বাইডেনকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় এখনো মেনে নেননি ট্রাম্প। তাই তিনি তাঁর বক্তৃতা-বিবৃতিতে বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্বোধন করেন না। যথারীতি এবারও বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট সম্বোধন না করে আফগান পরিস্থিতির জন্য তাঁকে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বললেন ট্রাম্প।
‘সেভ আমেরিকা’ নামের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে দেওয়া সবশেষ বিবৃততে ট্রাম্প বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে আনার আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্য বাইডেনের ক্ষমা চাওয়া উচিত। একই সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে আনার আগেই মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্যও তিনি বাইডেনকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আফগানিস্তানে থাকা আমেরিকার ৮৫ বিলিয়ন ডলারের অত্যাধুনিক সব অস্ত্রশস্ত্র এখন তালেবানের হাতে। আধুনিকতম প্রযুক্তির এসব অস্ত্রশস্ত্র এখন সহজেই চীন ও রাশিয়ার করায়ত্ত হবে। এসব দেশ এই অস্ত্র দেখে নিজেরাই তা তৈরি করতে পারবে।
এদিকে, ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ছেড়ে আসার ঘটনাটি খুবই ভালো। কিন্তু মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন নিয়ে বাইডেনের চেয়ে মন্দ কাজ আমেরিকার ইতিহাসে কেউ কখনো করেননি।বিজ্ঞাপন
ট্রাম্প বলেন, আফগানিস্তানের এখনকার ঘটনা আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
ট্রাম্প যখন বাইডেনের সমালোচনা করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন, তখনই এর জবাব দেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাইডেন বলেন, তাঁর পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা করে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি কেবল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার সময়ই তালেবানকে শক্তিশালী করে রেখে গেছেন বলে দাবি করেছেন বাইডেন। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাইডেন বলেন, নতুন করে সেনা পাঠিয়ে আফগান যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া বা সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার মধ্যে একটি বিষয়কে বেছে নিতে হয়েছে তাঁকে। আফগানিস্তানে আরও বেশি সময় মার্কিন সেনা থাকলেও ফলাফলে কোনো পার্থক্য হতো না।
মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী কার্যত কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অনেক অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম তালেবানের হাতে চলে গেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
২৫ জন মার্কিন সিনেটর আফগানিস্তানে থেকে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধসরঞ্জামের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছে। আমেরিকার জনগণের করের অর্থের অস্ত্রশস্ত্র এভাবে তালেবানের হাতে যাওয়ায় সিনেটররা উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।