বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বনাঞ্চল আমাজনের পাশাপাশি আফ্রিকার ১০ লাখ বর্গমাইলের বেশি বনাঞ্চলও পুড়ছে বলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার উপগ্রহের ছবিতে দেখা গেছে।
গ্যাবন থেকে অ্যাঙ্গোলো পর্যন্ত আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যাঞ্চলে কঙ্গো অবববাহিকার যে বনাঞ্চল পুড়ছে তাকে পৃথিবীর ‘দ্বিতীয় সবুজ ফুসফুস’ ডাকা হয় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সান।
আকারের দিক থেকে তুলনামূলক বড় অংশের বন পুড়লেও এখনই এটিকে আমাজন অগ্নিকাণ্ডের মতো গুরুত্ব দিতে নারাজ পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, জি-৭ সম্মেলনে অংশ নেওয়া সদস্য রাষ্ট্রগুলো ব্রাজিলের অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় নেওয়া পদক্ষেপের মতো কিছু আফ্রিকার বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছেন।
“সাব-সাহারান আফ্রিকার বনও জ্বলছে,” টুইটারে বলেছেন তিনি।
আবহাওয়াবিদদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের নির্দিষ্ট দুটি দিনে ব্রাজিলে যতগুলো অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, অ্যাঙ্গোলাতে তার তিনগুণ বেশি আগুনের ঘটনা দেখা গেছে।
তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, নির্দিষ্ট ওই দুই দিনে ব্রাজিলে যেখানে রেকর্ড ২ হাজার ২০০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে; ওই একই সময়ে অ্যাঙ্গোলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯০২টি, গণতান্ত্রিক কঙ্গোতে ৩ হাজার ৩৯৫টি।
আমাজনের মতো আফ্রিকার এই বনাঞ্চলও বিপুল পরিমাণ কার্বন সঞ্চিত রাখে; এটি হাজার হাজার বিপন্ন প্রজাতির আবাসস্থলও।
সান বলছে, পরিবেশবাদীদের চাপের মুখে জি-৭ নেতৃবৃন্দ বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় তড়িৎ পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও আফ্রিকার বনের অগ্নিকাণ্ড তুলনামূলক কম মনোযোগ পাচ্ছে।
অবশ্য কঙ্গো অববাহিকার বনাঞ্চলের যে অংশে আগুন লেগেছে, সেটি বনের সংবেদনশীল এলাকার বাইরে বলে নাসার ছবিতে দেখা যাচ্ছে।
কঙ্গো অববাহিকায় কাজ করা পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী ফিলিপ ভার্বেলাইনও আমাজনে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে এর তুলনা দিতে নারাজ।
তিনি জানান, শুষ্ক মৌসুমে জমি পরিষ্কারের অংশ হিসেবে আফ্রিকার কৃষকরা প্রতিবারই ঝোপেঝাড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
“এটা আফ্রিকায় নিয়মিতই ঘটে,” বলেছেন তিনি।
অ্যাঙ্গোলার সরকারও আফ্রিকার অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে আমাজনের তুলনা টানার বিষয়ে সতর্ক করেছে। যে কোনো ধরনের তুলনা ‘ভুল তথ্য’ দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছে তারা।
শুষ্ক মৌসুমের শেষ দিকে এ অগ্নিকাণ্ড অনেকটা স্বাভাবিকই, বলেছে দেশটির পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।