করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (১১ মার্চ) হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে তিনি বলেছেন, আগামী ৩০ দিনের জন্য ইউরোপ থেকে সব ধরনের ভ্রমণ স্থগিত থাকবে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তবে ‘শক্ত কিন্তু প্রয়োজনীয়’ এই বিধিনিষেধ যুক্তরাজ্যের জন্য প্রযোজ্য হবে না বলে জানান তিনি।
দুই সপ্তাহে ভাইরাসটি চীনের বাইরে ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ১৩৫ জন, আর মারা গেছে ৩৮ জন।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের উপকূলে নতুন করে আক্রান্ত প্রবেশ ঠেকাতে আমরা ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরণের প্রবেশ বাতিল করতে যাচ্ছি’। মার্কিন অর্থনীতির ওপর করোনা ভাইরাসের প্রভাব ঠেকাতে ছোট ছোট ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোর জন্য শত শত কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়া কর অব্যাহতি দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের ভাষণ প্রচারের কিছুক্ষণের মধ্যে এক প্রেসিডেন্সিয়াল ঘোষণায় ইউরোপীয়দের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ১৪ দিন আগে যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শেনজেন বর্ডার-ফ্রি এলাকায় অবস্থান করেছেন তাদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। ফলে এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। আয়ারল্যান্ড শেনজেন ভুক্ত দেশ নয়। আর বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও রোমানিয়া ইইউ সদস্য হলেও শেনজেন এলাকার অংশ নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউরোপ থেকে ভ্রমণ বাতিল করলেও দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত দেশের সাধারণ মানুষ সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কম। তবে এই মাসে বেশ কয়েক জন নতুন করে শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইতোমধ্যে নিউ ইয়র্কের উত্তরাঞ্চল নিউ রচেল্লেতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকায় আলাদা থাকতে বলা বেশ কিছু মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করছে ন্যাশনাল গার্ড। এছাড়া ওয়াশিংটন রাজ্যের গভর্নর বেশ কয়েকটি এলাকায় বড় ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছেন।