ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারকে উচ্ছেদ করে সেখানে দুর্নীতিমুক্ত বিজেপি সরকারকে বসানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ রুখতে আসামে এনআরসির তালিকা প্রণয়ন চূড়ান্ত করা হবে।
অমিত শাহ আজ শনিবার দুপুরে কলকাতার ধর্মতলার পাশে মেয়ো রোডে বিজেপির যুব মোর্চার ডাকে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নেই। চলছে মাফিয়া রাজত্ব। শিল্প নেই, আছে বোমা তৈরির কারখানা। তাই এই সরকারকে উৎখাত করে গণতান্ত্রিক বিজেপি সরকার আনতে হবে। তিনি এই সমাবেশে জনসমাগম দেখে বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশের ভিড় বলছে পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন আসছে।’
অমিত শাহ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের জন্য আসামে নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি করা হচ্ছে। মমতার আপত্তিতে এই এনআরসির কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। আসামে এনআরসির কাজ আইনি বলে সম্পন্ন করা হবে। অমিত শাহ জোরের সঙ্গে বলেন, ভারতে কোনোক্রমেই অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই দেওয়া হবে না। তবে একজনও উদ্বাস্তুকে ভারত থেকে তাড়ানো হবে না। ভারত সরকারের দায়িত্ব উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া। বিজেপিও সব সময় উদ্বাস্তুদের পাশে আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন, এ দেশের নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিল হবে না। তিনি কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘তারা এবার পরিষ্কার করুক পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার যে আইন প্রণয়ন করেছে সে ব্যাপারে তাদের অবস্থান কী?’
অমিত শাহ বলেন, ‘অনুপ্রবেশ নিয়ে একসময় মমতা সরব ছিলেন। বলতেন, বাম দলের ভোট ব্যাংক ছিল এই অনুপ্রবেশকারীরা। এখন সেই অনুপ্রবেশকারীরা তৃণমূলের ভোট ব্যাংক হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর লক্ষ্যে ২০০৫ সালে লোকসভায় মমতাকে অনুপ্রবেশ নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ না দিলে তিনি অনুপ্রবেশকারীদের লিস্ট ছুড়ে দিয়েছিলেন লোকসভার স্পিকারের দিকে। সেই মমতা আজ ভোটের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। কারণ, অনুপ্রবেশকারীরা তাঁর ভোটব্যাংক। অথচ সেদিন মমতা বলতেন, অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেওয়া হোক।’
অমিত শাহ বলেন, ‘আজ আমাদের কাছে দেশ এবং দেশের নিরাপত্তা বড়। মমতা স্পষ্ট করুক, নিরাপত্তা বড়, না ভোটব্যাংক বড়? আমরা কোনোক্রমেই অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই দেব না। এই অনুপ্রবেশ বন্ধ না হলে পশ্চিমবঙ্গ বাঁচানো যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘কলকাতা এয়ারপোর্টের কাছে তৃণমূলের পোস্টারে লেখা দেখলাম “বাংলাবিরোধী বিজেপি, গো ব্যাক”।’ তিনি বলেন, বিজেপি বাংলাবিরোধী নয়, বরং বাংলাকে ভালোবাসে। বাংলাকে সম্মান করে। তিনি বলেন, ‘আজ মহান স্বাধীনতাসংগ্রামী ক্ষুদিরামের বলিদান দিবস। এই দিনকে সামনে রেখে আমাদের যাত্রা শুরু হলো।’ বলেন, ‘এই বাংলা বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, সুভাষচন্দ্র বসু, বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায়, ¤শ্রীচৈতন্য দেব আর নজরুলের বাংলা। ক্ষুদিরামের বাংলা। আমরা এই মনীষীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।’