গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে যেভাবে পুলিশ কে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে তা একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে সেই দায় বোধ থেকে এই লেখা।
ধরা যাক- পঞ্চগড়ে কোন সংবাদ প্রতিনিধি একটি বাজে কাজ করেছেন, সেটার জন্য কি সমস্ত সাংবাদিকদের গুষ্টি উদ্ধার করা হবে সোশ্যাল মিডিয়াতে?
২ লক্ষাধিক পুলিশ সদস্য সারাদেশে । একজন পুলিশ কনস্টেবল ধর্মীয় গোঁড়া মন মানসিকতা ধারণ করলে তার ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের দ্বারা কেন দুই লক্ষাধিক সদস্য কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সব জায়গায় নাস্তানাবুদ করা হবে? পুলিশের নাম শুনলেই একশ্রেণীর মানুষের এত চুলকানি কেন?
এই পুলিশ বাহিনী মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। করোনার সময় এই পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম ও অবদান দেশবাসীর হৃদয় ছুঁয়েছে ।
ইতিমধ্যে সেই পুলিশ সদস্যকে খুঁজে বের করে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোন ব্যক্তির দায় সমগ্র বাহিনীর উপর পড়তে পারে না। কিন্তু বারবার পুলিশ এটার শিকার। পুলিশ এই সমাজেরই অংশ, পুলিশ কারো বাবা, কারো মা , কারো বোন ।
একজন অল্প শিক্ষিত পুলিশ কনস্টেবলের ধর্মীয় গোঁড়ামি ও খারাপ আচরণ একটি বাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করে না।বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল । নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় সজাগ ও কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
আমি কোন পক্ষ নিয়ে বলছি না। আমি একজন পুলিশ সদস্য এবং সেই সাথে আমি একজন সংস্কৃতিকর্মী। সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে আমি ফান্ডামেন্টালিস্ট বা ধর্মীয় গোঁড়ামি কে ঘৃণা করি। পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা গর্হিত কাজ এজন্য তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তাতে কোন আপত্তি নাই।
কিন্তু নিজের গর্ভবতী স্ত্রীকে পিছনে রেখে আরেক মহিলাকে কেউ গালিগালাজ করবে এটা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য?
শুধু মাত্র এক পক্ষের কথা শুনে ‘টিপ ও পুলিশ’ সংক্রান্ত যে নাস্তানাবুদ অবস্থা পুরো সোশ্যাল মিডিয়াতে সেটার দায়ভার কে নিবে? এমন যদি হয় ভুক্তভোগী মহিলা নিজের রাগ ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নিজের মন গড়া অভিযোগ করেছেন। কারণ ইতিমধ্যেই তার ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেওয়া ও তাকে হত্যার চেষ্টা এই অভিযোগ দুটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
আমার পয়েন্ট হচ্ছে কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধু এক পক্ষের কথা শুনে পুলিশকে এমনভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে হেয় প্রতিপন্ন করা হবে কেন এবং এর দায়ভার কে নিবে?
-দেওয়ান লালন আহমেদ