মাহমুদউল্লাহর নামার কথা ছিল চার নম্বরে। কিন্তু সিদ্ধান্তটা বদলে গেল ম্যাচ শুরুর পর। চারে যাবেন বেন কাটিং, পাঁচে কার্লোস ব্রাফেট। মাহমুদউল্লাহ আরও পরে। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে কাটিংও ফিরে এলে অধিনায়ক গেইল আবার মত বদলান। মাহমুদউল্লাহকে বললেন, ‘তুমি যাও।’
বাকিটা অজানা থাকার নয় কারওই। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) ২ সেপ্টেম্বর জ্যামাইকা তালাওয়াসের বিপক্ষে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসকে পাঁচ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। নামের পাশে ১১ বলে অপরাজিত ২৮ রান। তাঁর ওপর আস্থা রাখায় অধিনায়কের প্রতি কৃতজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ, ‘অধিনায়ককে ধন্যবাদ দেব। ক্রিস গেইল আমাকে যেতে বলল। আমিও চাচ্ছিলাম তাঁর আস্থার প্রতিদান দিতে। আলহামদুলিল্লাহ আমার ছোট ইনিংসটা দলের জয়ে কাজে লেগেছে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও অনেকবার ম্যাচ জেতানোর নায়ক হয়েছেন। আবার চাপে ভেঙে পড়ার নজিরও আছে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তবে সিপিএলের ওই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ এর কোনোটাই মাথায় রাখেননি, ‘চার ওভারে ৫০-এর মতো রান দরকার ছিল। গিয়েই ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছি। ঠিক করেছিলাম প্রথম বল থেকেই মারতে হবে।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে চোখে পড়ার মতো কিছু করার লক্ষ্য ছিল। সেটা জ্যামাইকা তালাওয়াসের বিপক্ষে ম্যাচেই শুধু কিছুটা পূরণ হয়েছে। বাকি ম্যাচগুলোতে পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো না। সব মিলিয়ে আট ম্যাচের ৬ ইনিংসে রান ৮৭। মাহমুদউল্লাহ নিজেও ‘ভালো’র দাবি করছেন না, ‘একশতে এক শ হয়েছে বলব না। হয়তো মোটামুটি পারফর্ম করেছি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল, আমি আরেকটু ভালো করতে পারতাম। বেশির ভাগ ইনিংসে ভালো শুরু পেয়েছি। কিন্তু ১৪,১৬, ২২-এ রকম রান করে আউট হয়ে গেছি।’ তৃপ্তির জায়গা ওই একটাই, ‘আমি সব সময় মনে করি, দলের জন্য খেলতে হবে। দলের জয়ে যদি সামান্য অবদানও থাকে আমার সেটাতেই আমি সন্তুষ্ট হই।’
সিপিএলে এটি মাহমুদউল্লাহর দ্বিতীয় মৌসুম। আগের বারের চেয়ে এবারই বেশি উপভোগ করছেন। বড় কারণ, এবার তাঁর অধিনায়ক ছিলেন ক্রিস গেইল, ‘আমাদের দলটা ছিল তারকানির্ভর। এই দলে খেলতে পারাও একটা বড় ব্যাপার। গেইলের কথা যদি বলি, বরিশালের হয়ে ওর সঙ্গে একবার বিপিএলে খেলেছি। ওর অধিনায়কত্বে এবারই প্রথম খেললাম। অসাধারণ একজন অধিনায়ক, অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। তার চেয়েও বড় কথা অসাধারণ একজন মানুষ।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে সবাই দেশে ফিরে এলেও মাহমুদউল্লাহ থেকে যান সিপিএলে খেলতে। দিন দু-এক আগে যখন দেশে ফিরলেন, পরিবার ছাড়া দুই মাসেরও বেশি সময় পার। মাত্র তিন দিন দেশে থেকে আবার দুবাইয়ের বিমানে ওঠার আগে তাঁর সব ব্যস্ততা পরিবারকে ঘিরে হওয়াই স্বাভাবিক। কাল মুঠোফোনে কথা বলার সময়ও ভীষণ ব্যস্ত ছিলেন ছেলেকে গল্প শোনানোয়। এর মধ্যেই জানালেন এশিয়া কাপে লক্ষ্যের কথা, ‘আমার প্রত্যাশা তো দলের জয়ে অবদান রাখতে পারা। দলীয়ভাবে অবশ্যই চাইব চ্যাম্পিয়ন হতে। কাজটা সহজ হবে না। প্রতিটা দলই দুর্দান্ত। সবাই খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে।
আমাদের সব ম্যাচেই সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। তবে আগেই বেশি দূর চিন্তা না করে ম্যাচ ধরে ধরে এগোনো ভালো হবে।’ বাংলাদেশ দলের চিন্তাও সেটাই। আগে তো গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানকে সামলাতে হবে। তারপরই না অন্য কিছু!