কদিনের বিরতিতে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে যোগ হয়েছে নতুন স্পন্সর। ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিসিবির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশে। নতুন জার্সিতে নতুন স্পন্সর নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ নতুন কিছু উপহার দিতে পারবে?

আজ দুপুরে টুর্নামেন্টপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এলেন দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও কোচ স্টিভ রোডস। দুজনকে দিতে হলো একটি অভিন্ন প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্নটা সাকিব আল হাসানকে নিয়ে। নিজের ফিটনেস নিয়ে দুদিন আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছেন, তিনি ২০-৩০ শতাংশ ফিট।

কোচ রোডস তো বিশ্বাসই করেন না, সাকিব ২০-৩০ শতাংশ ফিট, ‘আমি মনে করি না সে ২০-৩০ শতাংশ ফিট। আমার মনে হয় সে আরও বেশি ফিট। এ ধরনের বিবৃতি সংবাদ শিরোনাম হয়। আমি নিশ্চিত সাকিব আরও বেশি ফিট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সে দুর্দান্ত খেলেছে। সেখানে যেভাবে খেলেছে তার অবস্থা খুব একটা বদলায়নি। সবাই জানি তার অস্ত্রোপচার দরকার। সভাপতির সঙ্গে কথা বলেই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এশিয়া কাপটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে পুরোপুরি ফিট নয়। তবে ক্যারবিয়ানে যেভাবে খেলেছে সে যদি এবারও সেভাবে খেলে সেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক ভালো হবে। সে দুর্দান্ত ক্রিকেটার। যদি সাকিব ৬০-৭০ শতাংশ ফিটও থাকে, সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে অনেক কিছু পাবেন।’

কোচের কথার পুনরাবৃত্তি ঠিক নয়, তবে সাকিবের ফিটনেস নিয়ে মাশরাফির কথা হলো, সিদ্ধান্ত যখন দিয়েই ফেলেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, সেটি নিয়ে নতুন অজুহাতের কিছু দেখেন না অধিনায়ক, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব যেভাবে খেলেছে, সব মিলিয়ে যদি পারফরম্যান্স দেখেন, তাহলে বলতে হবে আমাদের জয়ের পেছনে তাঁর পারফরম্যান্স অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। সে অতটুকু ফিট থাকলে সেটাই দলের জন্য যথেষ্ট। তবে সিদ্ধান্তটা সাকিবের। এখানে কারও হাত নেই। সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এখানে অজুহাতের কোন জায়গা থাকার কথা না। সে যখন খেলবে তখন শতভাগ দিয়েই খেলবে।’

এশিয়া কাপ সামনে রেখে বাংলাদেশ দলে কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করেছে ২৭ আগস্ট। হজ করতে যাওয়ায় শুরুতে না থাকলেও শেষের দিকে সাকিব চাইলে অনুশীলনে যোগ দিতে পারতেন। সাকিব অবশ্য সময়টা কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারের সঙ্গে। সেখান থেকেই তিনি দুবাইয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। সাকিব যদি এশিয়া কাপ খেলেনই, অনুশীলনে কি ঘাটতি থেকে গেল না? বা এটির প্রভাব পড়বে না দলে?

কোচ রোডস লম্বা এক উত্তর দিলেন। যেটির সারমর্ম দাঁড়ায়, ‘ছোট করে যদি বলি, না। দলে এটির কোনো প্রভাব পড়বে না। দলের সবাই খেলবে একে অপরের সঙ্গে এটিই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। সাকিবকে দলের সবাই অনেক সম্মান করে। সাকিব সেটা বোঝে। সবাই বোঝে সে অনেক ক্রিকেট খেলে। সতেজ সাকিবকে পেতে চাই এবং তার সেরাটা নিশ্চিত করতে চাই। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিতে পারি আমরা। এটা একজন খেলোয়াড়কে আরও চনমনে করে। তরুণ থাকতে সে অনেক অনুশীলন করেছে। মাঠে অনেক ভালো করেছে। টেস্টে প্রতি ইনিংসে ৫০ ওভার বোলিং করেছে। ঠিক লাইন, লেংথে কীভাবে বোলিং করতে হয় সেটা সে জানে। সব সময় তার অনুশীলনের প্রয়োজন নেই। ক্যারবীয় সফরে প্রচুর অনুশীলন না করেও সে ভালো খেলেছে। কখন কী করতে হবে সেটা সে জানে।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভালো করা আত্মবিশ্বাস আর গত ছয় বছরে এশিয়া কাপে নিজেদের ভালো পারফরম্যান্স বাংলাদেশ অনুপ্রাণিত করছে মরুর দেশে দুর্দান্ত কিছু করতে। শরতের এই ক্ষণে আকাশে পেঁজাতুলার মতো ভাসতে থাকা মেঘ যেমন চনমনে আলোকরশ্মি হঠাৎ হঠাৎ আড়াল করে দেয় খনিকের জন্য, সাকিবের বিষয়টাও এক টুকরো মেঘ হয়ে কখনো কখনো ঢেকে দিচ্ছে দলের টগবগে আত্মবিশ্বাসটা!

Leave a Response