বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে উঠেছে।

২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে মঙ্গলবার বিলটি সংসদে তোলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

পরে বিলটি পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলটি উত্থাপনের আপত্তি করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম। কিন্তু সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়ে যায়।

সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়ে বলেন, অংশীজনরা এই বিলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনকে টিআইবি কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

ফখরুল ইমাম আরও বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মত প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধের উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিলো, খসড়া আইনেও রাখা হয়েছে। অনেকেই এই খসড়া আইনকে নিবর্তনমূলক বলে মনে করছেন।

জবাবে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার জগতে ঝুঁকিও বাড়ছে। সাইবার অপরাধগুলো এত বেশি মারাত্মক, এত বেশি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, অর্থ ও উপাত্ত সুরক্ষণের জন্য এটা এত বেশি প্রয়োজন, যার ফলে ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রয়োজন, সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে আইসিটি উপদেষ্টার পরামর্শে, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, আইনমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাতীয় পর্যায়ের সংবাদ মাধ্যম, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংস্থা, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি উত্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যেগুলো অজামিনযোগ্য ছিল সেখানে জামিন যোগ্য করা হয়েছে। চারটি ধারা শুধু অজামিনযোগ্য হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে।

আইনটিকে উদার ও ভবিষ্যতমুখী বলেও উল্লেখ করেন পলক।

বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন হচ্ছে। তবে নতুন আইন নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের। প্রস্তাবিত আইনের খসড়া উপর অংশীজনদের মতামতও নেয়া হনি।

তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষা করার সময় সংশ্রিষ্টদের মতামত নেয়া হবে।

এদিকে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বা সাংবাদিকতা করতে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সরকার খেয়াল রাখবে।

Leave a Response