নেতাকর্মীদের সংযত আচরণের নির্দেশ দিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘নিজেদের আচরণ সংযত করুন। শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেছে। আপনারা ভালো আচরণ করুন মানুষের সাথে। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চিরদিন থাকে না।’

রোববার দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশে কারও ফরমায়েশে নির্বাচন হবে না  মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। এটাকে আর জীবিত করে লাভ নেই।  দুনিয়ার সব দেশে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া ইলেকেশন হয়। বাংলাদেশে কেন ইউরোপ-আমেরিকার নেতারা আসে। আমি জিজ্ঞাসা করি, আপনাদের কোন দেশে তত্ত্বাবধায়কে ভোট হয়েছে। ইউরোপও বলতে পারেনি, আমেরিকা বলতে পারেনি। আমি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ভোট করব। এ প্রতিশ্রুতি আমি দিতে পারি। গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বলব পর্যবেক্ষক দিয়ে এই ভোট পর্যবেক্ষণ করুন।

সেতুমন্ত্রী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘সজ্জন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তিনি সজ্জন। কিন্ত কথাবার্তায় বড় বেসামাল। মির্জা ফখরুল কলেজের শিক্ষক, এতো মিথ্যা কথা বলতে পারেন, এতো গালিগালাজ করতে পারেন। তার মুখে এতো বিষ ভাবতেও অবাক লাগে। দেখতে একজন পাকা সাচ্চা ভদ্রলোক। কিন্ত কথা যখন বলে তখন মনে হয় একজন প্যাথলজিকাল লায়ার। ফখরুল একজন শিক্ষক হয়ে এত খারাপ কথা, এত নোংরা কথা তার মুখ দিয়ে কেমন করে বের হয়।

কাদের বলেন, ‘এই মিথ্যাবাদী (ফখরুল) এখন বলে তত্ত্বাবধায়ক আসলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না।  ২০০৮ সালে এই ফখরুল এবং তার নেত্রী বলেছিল, আওয়ামী লীগকে মাত্র ৩০টি আসন দিয়েছি। কিন্তু নির্বাচনে দেখা গেল ৩০টি আসন বিএনপিই পেয়েছে। তারা যেটা আওয়ামী লীগকে দিতে চেয়েছে আল্লার হুকুম সে ৩০টি তাদের ভাগ্যে জুটেছে।  এবার যে কি হবে জানি না। এবার আরও বেপরোয়া বেসামাল। ফখরুল লন্ডনের হুকুমে চলে। যে দণ্ডিত আসামি অর্থপাচার করে। মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছে। যে দলের নেতা দণ্ডিত আসামি। সেই দল এই দেশের মানুষ সমর্থন করতে পারে না।’

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘এই দলের কাছে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, আইনের শাসন, দেশের নিরাপত্তা, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। বিএনপি মানে ভোট চুরি, ভোট জালিয়াতি। বিএনপি মানে ভুয়া ভোটার তালিকা। বিএনপি নালিশ পার্টি। এখন নালিশ করতে করতে আর কাজ হচ্ছে না। এখন বিএনপি খাই-দাই পাটি। ক্ষমতার জন্য পাগল কয়ে গেছে, বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের লক্ষ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে বিএনপির নালিশে কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ইউরোপ-আমেরিকা এসেছে। বিএনপি ভেবেছে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দেবে। পাইলেন কী? ঘোড়ার ডিম। ইউরোপ-আমেরিকা কী দিলো? এখন বিএনপি নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘বিএনপি বুঝতে পেরেছে ভোট দিলে এখন আওয়ামী লীগই জিতবে। বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আমি যা বললাম বাস্তবে সেটা দিনক্ষণ লিখে রাখুন।’

সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আগামী ২৭ জুলাই ঢাকাতে বিএনপির মহাসমাবেশ এ নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আমাদের আগস্ট মাস, সেপ্টেম্বর মাস, জুলাইয়ের বাকী কয়দিন ও অক্টোবর মাস নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি জাতীয় উন্নয়ন শোভাযাত্রা।’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মির্জার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন।

Leave a Response