নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী আলোচনাকালে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধূরী মায়া বীর বিক্রম বলেন বঙ্গবন্ধু এই উপমহাদেশের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করেছেন।’
রাজউক অডিটরিয়ামে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজউক আয়োজীত আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে মায়া চৌধূরী বলেন ‘৬ দফার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু যদি এক বা দুই দফা থেকে সরে আসতেন, তাহলে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে তিনি কখনোই আপস করেননি। সে কারণে পাকিস্তানি জান্তা তাকে বছরের পর বছর জেলে বন্দি করে রাখে। লড়াই-সংগ্রামের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তিনি জাতির জনক হয়েছেন।’
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ বলেন ‘১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি এবং তাদের দেশীয় এজেন্টদের ষড়যন্ত্রে জাতির জনক ও তার পরিবার নৃশংস হত্যার শিকার হন। সারা বিশ্ব এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায়। বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে কলঙ্ক। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর সেই অপশক্তি বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করে, আমাদের শেখানো হয় ভুল ইতিহাস।’
বঙ্গবন্ধুর সব খুনির ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে রাজউক কর্মচারী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খান তার বক্তৃতায় বলেন ‘জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে খুনিদের বিচারের আওতায় এনে দেশকে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। এখনও বঙ্গবন্ধুর কতিপয় খুনি লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে।’ তিনি বলেন, তারা এখনো তাদের হত্যার রাজনীতির নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তারা কখনো চায় না দেশ উন্নত হোক। তারা সবসময় মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তাদের শুধু একটাই নেশা, তারা কীভাবে ক্ষমতায় যাবে। তারা হরতাল-অবরোধের নাম দিয়ে পেট্রোল বোমা মেরে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। ৭৫ এর খুনিদের রক্তের নেশা এখনো শেষ হয়নি। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা অনেক খুনিদের বিচার করেছেন। কেউ কেউ এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসি দিতে হবে। এটা আমাদের দাবি না, এটা আমাদের অধিকার।
কর্মচারী সমিতির সাধারন সম্পাদক শফিউল্লাহ বাবু তার বক্ততায় বলেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সরকার দেশে কৃচ্ছ্রসাধনে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সে কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, লোডশেডিং হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের উন্নয়ন হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন-তাইওয়ানে যুদ্ধের দামামা আর করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বে এখন মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ঠিক সেই সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃচ্ছ্রসাধনে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’তিনি বলেন, জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছে তাদেরকে খুনি জিয়াউর রহমান রক্ষা করেছে। তাদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসিয়েছেন। আইন জারি করে খুনিদের রক্ষা করে গোটা জাতিকে অসম্মান করেছে এ বিএনপি-জামায়াত। এরা অপশক্তির সাথে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর লক্ষ্য নিয়ে আমাদের নেতাকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছে সবসময়।
তিনি বলেন, ‘সরকার ওএমএসে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশেও তা কমানো হবে।’
বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সময় দেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে, ঠিক তখন দেশকে অস্থিতিশীল করতে সেই পরাজিত শক্তি নানামুখী ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন বিদেশের মাটিতে বসে দেশকে সংঘাতের দিকে নিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছেন। তাদের সেসব মিথ্যা তথ্য, প্রপাগান্ডা আপনারা বিশ্বাস করবেন না।’
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান মিয়া। তিনি তার বক্ততায় আগামী প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,‘আপনারাই দেশের ভবিষ্যৎ। আপনারা সঠিক ইতিহাস জেনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবেন।’ অনুষ্ঠান শেষে দুস্থদের খাবার বিতরন করাহয়।