শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে দেশের বিদ্যমান সংকট মোকাবিলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। নিজ কার্যদিবসের প্রথম দিন এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

রনিল বলেন, ‘কিছু পরিকল্পনা আমার রয়েছে। সেসব যদি বাস্তবায়ন করার চ্যালেঞ্জ নিতে পারি, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতিও সামাল দিতে পারব।’

রাজধানী কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সাক্ষাৎকারে প্রথমেই শ্রীলঙ্কার দুঃসময়ে পাশে থাকা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় ভারতকে ধন্যবাদ জানান রনিল।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভারতের সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ এবং (দেশটির) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও নিবিড় ও সহযোগিতাপূর্ণ হবে।’

গত বছরের শেষ পর্যায় থেকে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হওয়া শুরু করে। সেই সময় থেকেই দেশটিকে আর্থিক সহযোগিতা ও ঋণ দিয়ে আসছে ভারত। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ‍ঋণ ও আর্থিক সহায়তাবাবদ ৩ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে দেশটি।

এই ঘটনার পর পুরো শ্রীলঙ্কা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দেশজুড়ে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলে বিক্ষোভকারীদের। দু’দিন ধরে চলা এই সংঘাতে নিহত হন সাত জন, আহত হন আরও তিন শতাধিক।

এই বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।

৭৩ বছর বয়স্ক রনিল বিক্রমাসিংহে এর আগে আরও ৫ বার বিভিন্ন মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে রাজাপাকসে পরিবারের উত্থানের পর জাতীয় রাজনীতিতে বিক্রমাসিংহে ও তার দল ইউএনপির প্রভাব কমতে থাকে। ২২৫ আসন বিশিষ্ট শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্টে বর্তমানে ইউএনপির আসন রয়েছে মাত্র ১টি।

তবে আর্থিক সংকটে জর্জরিত বর্তমান শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ পার্লামেন্ট সদস্যই আস্থা রেখেছেন রনিলের ওপর। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের ২২৫ জন এমপির মধ্যে ১৬০ জনই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহেকে।

সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে তার নেতৃত্বাধীন সরকার।

‘আমরা দায়িত্ব হলো বিদ্যমান সংকট থেকে উত্তরণে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং তা আমি পালন করব। প্রথমে দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানকে গুরুত্ব দিতে চাই।’

পিটিআইকে রনিল জানান, দেশে বর্তমানে যারা বিক্ষোভ করছেন তাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলতে ইচ্ছুক।

‘যদি তারা আগ্রহী হন, সেক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলব।’

Leave a Response