এশিয়ান গেমসে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের হার দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এক দিন বাদেই আজ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায়।
উজবেকিস্তান বা কাতারকে টপকে এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলবে, এ আশার কথা বাংলাদেশের ফুটবলার বা কোচিং স্টাফরা কখনোই বলেননি। কিন্তু গ্রুপের অন্য দল থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জয় বা ড্রয়ের প্রত্যাশার কথা তাঁদের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে প্রায়ই। আজই সেই প্রমাণের দিন। দেখা যাক, প্রত্যাশা আর সামর্থ্যের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু? বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯৪ আর থাইল্যান্ড আছে ১২২ নম্বরে।
প্রথম ম্যাচে উজবেকদের স্কিল আর গতির সমন্বয় এত ভালো ছিল যে কে কোন দিকে জায়গা বদল করছেন, বুঝতেই পারছিলেন না বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা। উজবেকরা শারীরিকভাবে অনেক এগিয়ে। তবু লড়াই করতে পারাই ওই ম্যাচে বড় তৃপ্তির জায়গা বাংলাদেশ দলের কাছে। তবে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা এত কঠিন না-ও হতে পারে। পরশু কাতারের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের ১-১ ড্র দেখে সেটাই মনে হয়েছে। এখানেই সুযোগ দেখছে বাংলাদেশ। রক্ষণে বোঝাপড়াটা ঠিক থাকলে একটু লড়া যাবে বলেই দলের বিশ্বাস।
বাংলাদেশের জন্য আসলে গ্রুপের তিনটি দলই কঠিন প্রতিপক্ষ। উজবেকিস্তান, থাইল্যান্ড, কাতার তিন দলই রাশিয়া বিশ্বকাপে এশিয়া অঞ্চলের বাছাইপর্বের চূড়ান্ত পর্বে খেলেছে। এই দলগুলোর কাছ থেকে পয়েন্ট পেলে বাংলাদেশের জন্য সেটিই তাই জয়েরই সমান। সত্যিকার জয়ের স্বপ্ন দেখাটা একটু নয়, যথেষ্টই বাড়াবাড়ি। এই থাইল্যান্ডের সঙ্গে ১৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র দুটি। তা-ও অনেক আগে। ১৯৮৫ সালে ১-০ এবং ১৯৮৯ সালে ৩-১। দুটিই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে, দুবারই ঢাকায়। দ্বিতীয় পরাজয়ের পরের বছরই ১৯৯০ সালে বেইজিং এশিয়াডে থাইল্যান্ড চতুর্থ হয়েছিল। দলটির বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ে গোল বাংলাদেশের গোল তিনটি করেছিলেন ওয়াসিম, সত্যজিৎ দাশ রুপু ও আহমেদ।
রুপু এখন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার। কাল সুইমিংপুলের পাশে বসে তিনিও চাইলেন স্বপ্নের সীমাটা একটু বাড়িয়ে দিতে, ‘রক্ষণটা জমাট রাখতে পারলে থাই দলের সঙ্গে খুব ভালো লড়াই করা সম্ভব। পয়েন্টের আশাও আমরা করছি।’ কিন্তু আশার বেলুন চুপসে যেতে চায় ২০১৪ সালের প্রীতি ম্যাচে ব্যাংককে থাইল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশের ৪-০ গোলের হারের স্মৃতিতে। সেই ম্যাচে খেলা মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামও কিনা এখন আশাবাদীদের দলে। কাল সাঁতার শেষে এশিয়ান গেমসের দলের বাইরে থাকা এই মিডফিল্ডার বলছিলেন, ‘ওরা অনেক শক্তিশালী। তবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের দল আরও ভালো লড়াই করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।’
বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে বরাবরই স্বপ্ন বোনা মানুষ। প্রতিটি ম্যাচেই নাকি জয়ের জন্য নামেন। নানা ব্যস্ততার ফাঁকে নিজেই বলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচেই আমি জিততে চাই। থাইল্যান্ড ম্যাচও ব্যতিক্রম নয়।’ শুনে ভালোই লাগে। অন্তত কোচের মুখে জয় শব্দটা আসে! তবে কাতারের বিপক্ষে থাইল্যান্ডকে দেখে তাঁর মনে হয়েছে, ‘ওরা খুব ভালো দল। আমাদের ভালো খেলতে হবে।’ দেখা যাক, কতটুকু ভালো খেলতে পারেন তাঁর শিষ্যরা?

Leave a Response