নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে জাপান।
মঙ্গলবারের মধ্যে তা কার্যকর হবে বলে জাপানি গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে।
তবে সরকার বলছে, জরুরি অবস্থার জারির সব ধরনের প্রস্তুতি তারা নিয়ে রাখছে। সরকার ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সুপারিশক্রমে এই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এই জরুরি অবস্থার আওয়তায় কেবল রাজধানী টোকিও এবং বাণিজ্যিক শহর ওসাকার থাকার সম্ভবনা বেশি বলে জানিয়েছে জাপানের গণমাধ্যম।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সোমবার সকাল পর্যন্ত জাপানে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৬৫৪ ও মৃতের সংখ্যা ৮৫ জন।
টোকিওতে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৩ জনে বেড়ে হয়েছে ১০৩৪ জন আর ওসাকায় মোট আক্রান্ত ৪৪৫ জন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণার কোন ক্ষমতা ছিল না। গত মাসে সংসদের এক সংশোধিত বিলে জরুরি অবস্থা জারির আইন পাশ হয়।
এই আইন অনুযায়ী, রোগটি জীবনের জন্য ‘গুরুতর হুমকি’ হয়ে উঠলে এবং এর দ্রুত বিস্তার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করলে প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন।
চীনের পরই জাপানে গত জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর বের হয়। এরপর তা কিছুটা ধীর গতিতে বিস্তার লাভ করছিল।
গত ২৪ মার্চ টোকিও অলিম্পিক গেইম স্থগিত হওয়ার আগে এই দেশে মোট আক্রান্তর সংখ্যা এক হাজারের নীচে ছিল। কিন্তু গত ১২ দিনে ব্যাপক হারে আক্রান্ত হওয়ার খবর বের হওয়ায় জনমনে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়। এরপ্রেক্ষিত্রে সরকার জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জাপানে সংক্রমণের গতি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য সরকারের ওপর চাপও বাড়ছিল। বিশেষ করে টোকিওতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে এক হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তা আরও জোরদার হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলো ও চীনের তুলনায় জাপানে সংক্রমণ বিস্তারের গতি এখনও ধীর বলে জানিয়েছে রয়টার্স
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি বাসিন্দাদের মেনে চলতে কঠোর পদক্ষেপ সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন টোকিও গভর্নর ইউরিকো কোইকে। তিনি জরুরি অবস্থা জারির পক্ষে বলে গত সপ্তাহেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বলে রয়টাসর্ জানিয়েছে।
জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলে, বেশি প্রাদুর্ভাব আক্রান্ত অঞ্চলের গভর্নররা লোকজনকে বাসায় অবস্থান করতে বলতে পারবে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দিতে পারবে। তবে অন্যান্য দেশে যে রকম লকডাউন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে সেরকম কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না।