বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং প্রচণ্ড অসুস্থ জানিয়ে তাঁর মুক্তির দাবিতে বিএনপি দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগামী ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তাঁর অভিযোগ, খালেদা জিয়াকে ‘সুস্থ’দেখিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়া গত এপ্রিল মাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ফখরুল বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতির প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করতেই এটা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার বিকল্প ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর মুক্তি দাবি করছি। এ দাবির পক্ষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মানববন্ধন ও ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মানববন্ধন পালিত হবে।’ আইনগতভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সে দায় সরকারের।
ঈদুল আজহার আগে বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোয় সমাবেশ শুরু করেছিল সে সমাবেশগুলো আবার হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ, ২৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী এবং ২১ তারিখে সিলেটে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তীতে রংপুরেও হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে যতটুকু জায়গা তাঁরা পাচ্ছেন সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, সেটা খালেদা জিয়ার নিজের ব্যাপার। তিনি এখন পর্যন্ত প্যারোল চাননি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া পাঁচ মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি আছেন। তাঁর স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ। তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। তাঁর পছন্দের হাসপাতালে সরকার চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’
বিএসএমএমইউর পরিচালক ও উপাচার্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়া সুস্থ। তাঁদের এই বক্তব্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর জন্য ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার দেখে এসেছেন তিনি হাঁটতে পারেন না, একা চলতে পারেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারদলীয় নেতারা ও মন্ত্রীরা কারাবন্দী থাকা অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। খালেদা জিয়ার মতো মামলায় সরকারের অনেক মন্ত্রীরা জামিনে আছেন বলে জানান ফখরুল। রাজনৈতিক কারণে খালেদাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদার জামিনে পদে পদে বাধা। স্বাস্থ্যগত কারণে আবার তাঁরা জামিনের চেষ্টা করবেন। কিন্তু মূল বিষয় রাজনীতি বলে জানান। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব সরকারের একটা মানবিক দিক থাকে। এই সরকারের কোনো মানবিক দিক নেই। যার কারণে খালেদার স্বাস্থ্যের এ অবস্থা।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাহীন রাখা হচ্ছে দাবি করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদার ব্লাড সুগার ১৪তে উঠে গেছে। এটাকে বিএসএমএমইউর চিকিৎসকেরা বলছেন স্বাভাবিক। তিনি হাঁটতে পারেন না। বাম হাতে কিছু ধরতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা বলছেন সুস্থ আছেন। চিকিৎসকেরা পেশাগত দায়িত্বপালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।