গত বছরের জানুয়ারিতে এনআরসি’র প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশ করে আসামের রাজ্য সরকার। প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে প্রায় প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়ে। এনিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত সরকার। গত বছরের জুলাই ও এবছরের জুনে দুই দফায় প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ে ৪১ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩৬ লাখ মানুষ নিজেদের বাদ পড়ার বিরুদ্ধে আপিল করে আর প্রায় দুই লাখ মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলে অন্যরা। এসব আপিল ও আপত্তির বিষয়ে শুনানি এখনও চলছে।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর যে কোনো রকম সহিংসতা মোকাবিলায় তৎপর হচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজর। যাতে রাজ্যের কোনো প্রান্তে কোনো রকম সহিংসতা ছড়াতে না পারে। এ জন্য সব জেলার পুলিশ সুপার ও কমিশনারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগম মাধ্যমগুলোতেও।
আসামের পুলিশ জানায়, তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। জানা, জনগণের সুরক্ষাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
এনডিটিভি জানায়, এনআরসি তালিকা প্রণয়ন সরাসরি সুপ্রিমকোর্টের তত্ত্বাবধানে রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতর থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এনআরসির নিয়মানুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশি ট্রাইব্যুনালে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকেন, স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তার মাধ্যমে ‘ডি ভোটার’ বলে চিহ্নিত হন অথবা কোনো ব্যক্তি বা তার উত্তরসূরির যদি কোনো মামলা বিদেশি ট্রাইব্যুনালে মুলতবি থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এনআরসি আপডেট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়া হবে।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে গুঞ্জনে বিশ্বাস করবেন না। তালিকা থেকে কেউ বাদ পড়লেই তাকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে না। প্রত্যেকেই বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবে।
এনআরসি তালিকা থেকে রেকর্ডসংখ্যক মুসলিমদের বাদ দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) এক বিবৃতিতে বলা হয়, আসামের নাগরিক তালিকা সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের রাষ্ট্রহীন করার হাতিয়ারে পরিণত হতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে ইউএসসিআইআরএফ।