১৯৭৩ সালে আয়াক্স থেকে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন ইয়োহান ক্রুইফ। ন্যু ক্যাম্পে ৫ বছর খেলে সর্বকালের অন্যতম এই সেরা ফুটবলার কাতালান জায়ান্টদের সঙ্গে এতটাই মিশে গিয়েছিলেন, যেন তিনি বার্সেলোনা শহরেরই কেউ। কোচ হিসেবেও বিরাট ছাপ রেখেছিলেন সেখানে। কাতালুনিয়া শহরে তার নামে সড়ক আছে বেশ কয়েকটি, এবার তাকে স্মরণীয় করে রাখতে তার নামে বার্সেলোনায় প্রতিষ্ঠিত হলো ‘এস্তাদি ইয়োহন ক্রুইফ’।
বুধবার জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয় ৬ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামের। ডাচ লিজেন্ডের নামকরণে তৈরি হওয়া এই স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় তার সাবেক দুই ক্লাব আয়াক্স ও বার্সেলোনার অনূর্ধ্ব-১৯ দল, যা ২-০ গোলে হারে স্বাগতিকরা। বার্সেলোনার চার অধিনায়ক লিওনেল মেসি, সার্জি রবের্তো, সার্জি বুশকেৎস ও জেরার্দ পিকে ছিলেন এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। ক্রুইফের স্ত্রী ও দুই সন্তানও ছিলেন অতিথি হিসেবে।
বলে লাথি মেরে নতুন স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন ক্রুইফের ছেলে জোর্দি। বার্সায় তার বাবাকে যে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, তাতে গর্বিত তিনি, ‘আমাদের জন্য আজকের দিনটা ছিল বিশেষ। আমার বাবার জন্য মানুষের যে দারুণ ভালোবাসা, সেটা দেখলাম। যেখানে তিনি সুখে ছিলেন, সেখানে তার নাম দেখতে পেরে আমরা গর্বিত।’
এই মাঠ ব্যবহার করা হবে বার্সার ‘বি’ দল ও মেয়েদের দলের ম্যাচের জন্য। তাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলও খেলবে ইউরোপিয়ান ম্যাচগুলো। নতুন এই স্টেডিয়াম বার্সার ট্রেনিং গ্রাউন্ডের একটি অংশ, ১২ মিলিয়ন ইউরোতে নির্মিত এই স্টেডিয়ামে আসনগুলো নীল রঙয়ের ও ছাদ লাল।
গত সোমবার ন্যু ক্যাম্পের বাইরে ক্রুইফের একটি ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়, যার নিচে লেখা ডাচ লিজেন্ডের দর্শন- ‘যাও এবং উপভোগ করো।’ নতুন স্টেডিয়ামের টানেল থেকে বের হওয়ার আগে খেলোয়াড়রা এই লেখা পড়ে আরও উজ্জীবিত হবে এবং বেঁচে থাকবেন ক্রুইফ ও তার দর্শন।
১৯৮৮ সালে বার্সায় কোচ হয়ে ফিরে আসেন ক্রুইফ। তার কোচিংয়ে বার্সেলোনার ‘ড্রিম টিম’ ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত জিতেছিল টানা চারটি লা লিগা। ১৯৯২ সালে তার অধীনে প্রথমবার ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সা। ১১টি ট্রফি জিতে ক্লাবটির অন্যতম সফল কোচ হিসেবে ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। শেষ ২ মৌসুমে ক্লাবটির হয়ে কোনও ট্রফি জেতেননি, কিন্তু তারপরও বার্সায় তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।