জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে প্রতিটি গ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে দেশের প্রতিটি গ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে হবে।
“শুধু উপজেলা নয়, বরং ইউনিয়ন ওয়ার্ড এবং গ্রাম পর্যন্ত নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। আর সে লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি এলাকায় নাগরিক সুবিধা যেন নিশ্চিত করা যায়, সরকার সে পরিকল্পনা নিয়েছে।”
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ সংলগ্ন এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সম্পর্কিত উপস্থাপন করা হয় অনুষ্ঠানে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফসলের জমি যাতে নষ্ট না হয় সেভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন।
তার পথ অনুসরণ করে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
“শুধু ইট-সুরকির স্থাপনা নির্মাণ নয় বরং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নদীতে অপ্রয়োজনীয় সেতু এবং বিলের পাশে সাগরপারের মতো উঁচু বাঁধ নির্মাণ না করার পরামর্শ দেন।
নিজের নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার উন্নয়নে এলজিইডির বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পের খবর নেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের অধীনে টুঙ্গিপাড়ায় ভূমি অধিগ্রহণসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর অধীনে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ২৮১টি পৌরসভায় ৩৪৬৫ কোটি টাকা বেশি ব্যয়ে বিভিন্ন কাজ করা হবে।
মূল কাজের মধ্যে রয়েছে- সড়ক উন্নয়ন, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ এবং ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, খাল খনন, পাড় বাঁধানো, পুকুর সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন, বৃক্ষরোপণ।
এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌরসভার অবকাঠামো ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস এবং অপরিহার্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবেশগত উন্নয়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে এলজিইডি কর্তৃক টুঙ্গিপাড়া পৌর এলাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কাজ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো করা হয়।
এগুলো হল- শেখ রাসেল শিশু পার্ক নির্মাণ (সমাপ্ত), টুঙ্গিপাড়া-পাটগাতী খাল পুনর্খনন ও সৌন্দর্যবর্ধন (সমাপ্ত), টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কমপ্লেক্স পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন (সমাপ্ত), টুঙ্গিপাড়া বাজারে মসজিদ পুনর্নির্মাণ (প্রস্তাবিত), টুঙ্গিপাড়া নতুন পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ (চলমান) প্রকল্পসহ মোট ১৬টি প্রকল্প।