আসন্ন গ্রীষ্মে ব্রিটেনের অর্থনীতি মন্দায় পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। ১৯৫০ দশকের মাঝামাঝি সময়ের পর পারিবারিক আয়ে সবচেয়ে সংকোচন এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, লকডাউন পরবর্তী প্রবৃদ্ধির মন্থর গতি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর জীবনযাত্রার মূল্যবৃদ্ধির দ্বিমুখী চাপে টানা দুই অর্ধ্বে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে এসেছে। যা মন্দার সংজ্ঞা।
ডাচ ব্যাংক আইএনজি-এর অর্থনীতিবিদ জেমস স্মিথ জানান, বছরের দ্বিতীয়ার্ধ্বে অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে। ব্যাংকের পূর্বাভাসে তিন মাস শেষে জুনে ০.৩ শতাংশ সংকোচন এবং তৃতীয়ার্ধ্বে ০.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার প্রকাশিতব্য পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্যে মার্চ মাসে খুচরো বিক্রিতে ভাটার কথা উঠে আসতে পারে। কারণ পরিবারগুলো ব্যয় কমিয়ে দিচ্ছে। খুচরো বাজারের কর্মকর্তারা জীবনযাত্রার মূল্যবৃদ্ধিতে বিক্রি কমে আসার বিষয়ে সতর্ক করে আসছিলেন।
কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকনোমিকস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ নেইল শিয়ারিং জানান, এই বছর পারিবারিক নিষ্পত্তিযোগ্য আয় ১.৯ শতাংশ কমতে পারে। ১৯৭৭ সালের প্রকৃত ১.৮ শতাংশ কমে যাওয়ার চেয়েও বেশি।
তিনি বলেন, তুলনামূলকভাবে বৈশ্বিক সংকটের পর ২০১১ সালে প্রকৃত আয় কমেছিল মাত্র ১.৫ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর প্রধান ক্রিস্টালিনা জিওর্গিয়েভা চলমান ও আগামী বছর প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে পারে সতর্কতা জানানোর পর বিশেষজ্ঞরা ব্রিটেনে মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি হতে পারে।
অ্যাকাউন্টেসি প্রতিষ্ঠান আরএসএম ইউকে-এর অর্থনীতিবিদ থমাস পিউগ জানান, তিনি আশঙ্কা করছেন ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে টিকে থাকতে ব্রিটেনের পরিবারগুলোকে সঞ্চয় ভাঙতে কিংবা ঋণ করতে হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য এই বছর মন্দা এড়াতে পারবে বলে মনে করার এটিই প্রধান কারণ। যদিও আমাদের পূর্বাভাস বলছে এই বছরের তিন অর্ধ্বে প্রবৃদ্ধি হবে গড়ে মাত্র ০.১ শতাংশ। ফলে তেলের মূল্য বৃদ্ধি বা সাপ্লাই চেইন ব্যহত হলে যুক্তরাজ্যের মন্দায় পড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না।