করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন তিনটি থার্মাল স্ক্যানার বসেছে। মঙ্গলবার স্ক্যানারগুলো ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটর এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হয়। এ ছাড়া বেনাপোল স্থলবন্দরেও নতুন একটি থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে।
চীনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর গত ২১ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল, শাহ আমানত ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জারি করা হয়। এর অংশ হিসেবে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানারে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হতো। এ জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরে তিনটি এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে একটি করে স্ক্যানার ব্যবহার করা হতো। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরের স্ক্যানারগুলো বিশেষ সতর্কতার আগেই নষ্ট ছিল। শাহজালাল বিমানবন্দরেও কয়েক দিন আগে দুটি স্ক্যানার অচল হয়ে যায়।
তবে সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে দেশে গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে পাঁচটি নতুন স্ক্যানার মেশিন বসানো হবে। এ দিন মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আইইডিসিআরের কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পাঁচটি নতুন থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি করে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরে একটি করে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হবে।
নতুন থার্মাল স্ক্যানারের বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগের স্ক্যানারগুলো প্রায়ই নষ্ট হয়ে যেত। সম্প্রতি তিনটির মধ্যে দুটি স্ক্যানার নষ্ট হয়ে যায়। তবে আজ একটি নতুন স্ক্যানার বসানো হয়েছে। নষ্ট একটি স্ক্যানারও মেরামত করা হয়েছে। এখন তিনটি স্ক্যানার দিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, একটি থার্মাল স্ক্যানার চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানোর পর বিকেল পাঁচটা থেকে এই স্ক্যানারে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু হয়।
জেলা সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বী বলেন, প্রথমে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরের জন্য দুটি স্ক্যানার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমুদ্রবন্দরেরটি পরে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আগে বিমানবন্দরকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে, এ রকম যাত্রী শনাক্ত সহজ হবে।
সিলেট অফিস থেকে জানানো হয়, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ দুপুরে নতুন স্ক্যানারটি সিলেট সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে বসানো হয়।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, সকালে স্ক্যানারটি সিলেটে এসে পৌঁছানোর পর সেটি বসানো হয়। বিকেলের দিকে স্ক্যানারটি চালু করা হয়েছে। স্ক্যানার বসানোর ফলে এর পাশে গেলেই যাত্রীদের শরীরে তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানা যাচ্ছে। বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানারটি দীর্ঘদিন নষ্ট ছিল।
আমাদের যশোর প্রতিনিধি জানান, বেনাপোল স্থলবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারটি বসানোর কাজ শেষ হয়। এরপর এই স্ক্যানারে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী বলেন, নতুন থার্মাল স্ক্যানার মেশিনটি বেনাপোল স্থলবন্দরে পৌঁছায়। এরপর মেশিনটি কাজ শুরু করে।