ঢাকার খিলগাঁও থানার গোড়ান এলাকার একটি বাসায় দুই বোনের জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ; তাদের মাকে ঘরে পাওয়া গেছে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায়।
ওই ঘরে আগুন ধরার কিংবা চুরি-ডাকাতির কোনো চিহ্ন পায়নি পুলিশ।দাম্পত্য কলহের কারণে স্বজনদের সন্দেহ, দুই সন্তানকে হত্যার পর ওই নারী নিজে আত্মহত্যার চেষ্টায় গায়ে আগুন ধরিয়েছিলেন।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে গোড়ানের একটি ভবনের চতুর্থ তলার এক ফ্ল্যাট থেকে শিশু দুটির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা গিয়েছিলেন।
নিহত শিশু দুটি হল মেহজাবিন আলভী (১২) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৭)। আলভী খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে, জান্নাত একই স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
শিশুটির মা আখতারুন্নেসা পপিকে (৩৫) অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান ওসি।চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, পপির পা ও হাত মিলিয়ে দেহের ১৮ শতাংশের মতো পুড়েছে।
ওই বাসায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন পপি; তার স্বামী মোজাম্মেল হক মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে থাকেন, সেখানে তার বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান রয়েছে।ঘরে আগুন ধরার কিংসা চুরি-ডাকাতির কোনো চিহ্ন পায়নি পুলিশ।পপির বাবা আবু তালেব ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে ও জামাতার মধ্যে কলহ ছিল।
তিনি বলেন, তার মেয়ে বিয়ের পর নয় বছর তার সঙ্গে থাকলেও কিছু দিন আগে আলাদা বাসা নিয়েছিলেন। জামাতা মোজাম্মেল প্রতি সপ্তাহে ঢাকা আসতেন, তবে গত সপ্তাহে আসেননি।মোজাম্মেল হক বলেন, প্রতি শুক্রবার তিনি ঢাকায় আসেন। কিন্তু বাড়িতে একটি জমি নিয়ে ঝামেলা থাকায় এবার তিনি আসতে পারেননি।
আবু তালেবের ধারণা, স্বামীর সঙ্গে কলহ থেকে পপি গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।এদিকে মোজাম্মেল বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পপির সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, রোববার তিনি ঢাকায় আসবেন।
এই ধরনের ঘটনা পপি ঘটাতে পারে, তেমন আঁচ করতে পারতে পারেননি বলে জানান তার স্বামী।“ওই সময় তার কথায় কোনো রাগ ছিল না। এ রকম একটি ঘটনা ঘটাবে, তা কথা বলে বোঝা যায়নি।”ওসি মশিউর বলেছেন, তার সব তথ্য আমলে নিয়েই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালাবেন তারা।