চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় পূবালী ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরিতে জড়িত কেউ এখনও ধরা পড়েনি; এই চোররা বিদেশি এবং দুজনই তিনটি ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এর আগে ঢাকায় অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ থেকে টাকা চুরিতে বিদেশিরা ধরা পড়েছিলেন। এবার রাজধানীর বাইরের দুই জেলায়ও ঘটেছে চুরি।
গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে চট্টগ্রামের চকবাজারে পূবালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম কলেজ শাখার বুথ থেকে তিন লাখ ৩৪ হাজার এবং তার পরপরই রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে ডবলমুরিংয়ে শেখ মুজিব রোড এলাকার বুথ থেকে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা চুরি হয়।
ওই দিনই কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় এলাকায় একই ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা চুরির খবর প্রকাশ পায়।
প্রথমে জানানো হয়েছিল, ১৭ নভেম্বরই রাত পৌনে ৯টায় কুমিল্লার এটিএমে চুরিটি হয়েছিল; কিন্তু কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আনোয়ারুল হক বলছেন, সেখানে চুরির ঘটনাটি ঘটে ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে।
তিনটি ঘটনায় মামলা হলে সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও তদন্তে নেমেছে।তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। কেউ শনাক্তও হয়নি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শহিদুর রহমান বলেন, এটিএম বুথে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তা বুঝতে পেরেছেন যে দুজন ব্যক্তিই তিনটি ঘটনা ঘটিয়েছিল। “বুথের সাথে থাকা সিসি ক্যামেরায় তাদের ছবি স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। তিনটি বুথেই এই দুজনকেই দেখা গেছে।”
প্রথমে তিনটি ঘটনা একই দিনে কাছাকাছি সময়ের বলে বলা হয়েছিল, তবে তা হলে একই ব্যক্তির একই সময়ে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে থাকা সম্ভবপর পর নয়।এর পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আনোয়ারুল হক জানান, তার এলাকার ঘটনাটি চট্টগ্রামের ঘটনার এক দিন আগের।
চুরির এই দৃশ্যটি চট্টগ্রামের শেখ মুজিব রোডের বুথের
যারা চুরি করেছেন, তারা এ কাজে অভিজ্ঞ বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুর। “তাদের টাকা তোলার দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে, তারা খুবই অভিজ্ঞ। তাদের এটিএম মেশিন সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা আছে। কোনো জটিলতা ছাড়াই চাবি দিয়ে মেশিন খুলে ডিভাইস লাগিয়ে টাকা তুলে নিয়ে যায়।”
তারা বিদেশি বলে ধারণার কথাও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। কেন সেটা মনে হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা জানে এটিএম বুথে সিসি ক্যামেরা থাকে। অথচ তাদের সে দিকে কোনো খেয়াল নেই। তারা মুখোশও পড়েনি। মুখ আড়াল করার চেষ্টাও করেনি। নির্ভয়ে কাজ করে চলে গেছে।
“এই কারণেই ধারণা করা হচ্ছে যে তারা বিদেশি। এদেশ থেকে দ্রুত চলে যাবে বলেই নিজেদের আড়াল করার কোনো চেষ্টা করেনি।”এ বছরের মে ও জুন মাসে রাজধানীর কয়েকটি এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় ইউক্রেইনের ৬ নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা শহিদুর বলেন, “ঢাকার বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনার সাথে চট্টগ্রামের এবং কুমিল্লায় টাকা চুরির ঘটনার বেশ মিল রয়েছে।”কিন্তু এবারের ‘বিদেশিরা’ বাংলাদেশ ছেড়ে এরই মধ্যে চলে গেছে কি না, সেই প্রশ্ন সামনে চলে আসে।
পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুর বলেন, “তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য আসছে। কিন্তু এসব তথ্যের কোনো সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি।”